দীর্ঘ ১ মাস পর সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে থাকা জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও জাহাজের ২৩ নাবিক। বাংলাদেশে সময় শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ।
মুক্ত হয়ে আনন্দে আত্মহারা নাবিকেরা। মুক্ত হওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেছেন অনেকে। এছাড়া জাতীয় পতাকা হাতে হাসিমুখে দেখা গেছে তাদের।
পুন্টল্যান্ড পুলিশ ফোর্সের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গারো অনলাইনকে জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ছিনতাই করা জলদস্যু দলের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে অভিযানে জলদস্যুদের দেয়া মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা হয়নি।
জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রী জোবায়দা নোমান জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফোন করেছিল। বলেছে, জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্ত হয়েছে, এখন ভালো আছে। তিনি আরও জানান, বেশিক্ষণ কথা হয়নি। কারণ তখন ব্যস্ত ছিল। সবকিছু গুছিয়ে পরে আবার কথা বলবে বলে জানিয়েছে। বলেছে চিন্তা করো না, দোয়া করো। দুবাই রওনা দিয়েছি।’
জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।
এদিকে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেছেন, জলদস্যুরদের মুক্তিপণ দিয়ে নাবিকদের উদ্ধারের তথ্য সরকারের কাছে নেই। শনিবার (১৩ এপ্রিল) নাবিক মুক্ত হবার সময় জলদস্যুরা নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন নাবিককে জাহাজ থেকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকারের দৃঢ়তায় নাবিকদের নিরাপদ রেখেছে। আমার ধারণা, নাবিকদের দেশে ফিরতে ২০ দিনের মতও সময় লাগতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর তারা মুক্তিপণ দাবি করে।